Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

উপজেলার ঐতিহ্য

সুনামগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যগত দিক দিয়ে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার গুরুত্ব অপরিসীম। বৃটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি উপজেলার মধ্যে বিশ্বম্ভরপুর সবার উপরে। অত্র উপজেলার নাম ডাক সুনামগঞ্জ তথা সারা দেশে সমাদৃত। এই উপজেলায় রয়েছে ৫টি ইউনিয়ন।পরিকল্পনা বলতে বর্তমান ও ভবিষ্যত কর্মকান্ডের মধ্যে নতুন সেতু বন্ধন তৈরী করা ও উন্নয়ন কর্মকান্ডকে গতিশীল রাখা। দেশের সার্বিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে এর মধ্যে বার্ষিকী পরিকল্পনা অন্যতম। স্থানীয় পর্যায়েও পরিকল্পনা কৌশলগতভাবে বিশেষ গুরচত্ব পেয়ে আসছে। অতীতের এ ধারাবাহিকতায় উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ (২০০৯ ও ২০১১ সালে সংশোধিত) এ দেশের উপজেলা সমূহের জন্য একটি বার্ষিক এবং পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যেহেতু পরিকল্পনা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করা হয়, সেহেতু কোন কাজগুলো কখন করা হবে তা নির্ধারন করার সুবিধার্থে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। পরিকল্পনা প্রনয়নের শুরচতেই নির্ধারিত দায় দায়িত্বের মধ্যে হতে কোন সময়ের জন্য কোন কাজটি অগ্রাধিকার দেয়া হবে তা সুনির্দিষ্ট করে নিলে কার্যক্রম বাসত্মবায়নের ÿÿত্রে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায় এবং তা থেকে জনগন দীর্ঘমেয়াদী উপকৃত হয়। পরিকল্পনা প্রনয়নে জাতীয় বা দেশ ভিত্তিক ও স্থানীয় ফলাফল অর্জনের দিকে গুরম্নত্ব আরোপ করা এবং নিমণ-উর্ধমূখী (bottom up approach) পদ্ধতি অনুসরন করা হয়। পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান বিষয়বস্ত্ত মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সম্পদের সুষ্ট ব্যবহার নিশ্চিত করা। খাত ভিত্তিক পরিকল্পনার লÿ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্য থাকে সংশিস্নষ্ট সকল উন্নয়ন খাতকে বিবেচনা পূর্বক স্থানীয় পর্যায়ে বার্ষিক পরিকল্পনা বিশ্বম্ভরপুরউপজেলা প্রণয়নের পদÿÿপ গ্রহণ করা হয়।

উপজেলা পরিষদকে একটি শক্তিশালী কার্যকর, গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিতামূলক স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লÿÿ্য স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক উপজেলা গর্ভন্যান্স প্রজেক্ট গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ৫ (পাঁচ বৎসর) (আগষ্ট ২০১১- জুলাই ২০১৬, UNDP, UNCDF,  European Union (EU) এবংSwitzerland Development Cooperation (SDC) এর আর্থিক সহযোগীতায় প্রকল্পটি বাংলাদেশের ৭টি বিভাগের ৭ টি জেলার সিলেট বিভাগে প্রকল্পের জন্য সুনামগঞ্জ জেলাকে বেছে নেয়া হয় এবং বিশ্বম্ভরপুরউপজেলায় প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পের কাজ শুরচহয়। এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে সহস্রাব্দের উন্নয়ন লÿ্যমাত্রা অর্জনে স্থানীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাসত্মবায়ন। স্থানীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা তৈরীর সÿমতা বৃদ্ধির লÿÿ্য প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় পরিকল্পনা একাডেমীর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাÿরিত হয়। উক্ত চুক্তির আওতায় বিশ্বম্ভরপুরউপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি অফিসার, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার, উপজেলা শিÿা অফিসার, উপজেলা প্রকৌশলীকে প্রশিÿণ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আরও মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয় এবং একটি পরিকল্পনা বই তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ পরিকল্পনা বই তৈরীর অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে স্থানীয় সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবহারের মাধ্যমে স্থানীয় সমস্যার সমাধান এবং একটি গণতান্ত্রিক কার্যকর শক্তিশালী পরিষদ গঠন। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন রম্নপকল্প ২০২১ এবং সহস্রাব্দ উন্নয়ন লÿ্য সমূহ  বিষেশভাবে বিবেচনায় এনে স্থানীয় জণগনের চাহিদার প্রতি দৃষ্টি রেখে বিশ্বম্ভপুর উপজেলার বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নে প্রয়াস নেয়া হয়। এ পরিকল্পনা প্রণয়নের ফলে উপজেলা পর্যায়ে সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

 


 

ভৌগলিক পরিচিতিঃ

ভৌগলিক পরিচিতিঃ

উত্তরে- ভারতের মেঘালয় প্রদেশ, দÿÿনে- সুনামগঞ্জ সদর ও জামালপুর উপজেলা

পূর্বে- ভারতের মেঘালয় ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা, পশ্চিমে- জামালগঞ্জ ও তাহিরপুর উপজেলা।

উপজেলার পটভূমিঃ

        সম্ভাবনাময় অথচ পশ্চাৎপদ হাওড়-বাওরে ভরপুর বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের (খাসিয়া/জৈমত্ম্ অংশ) পাদদেশে অবস্থিত যা নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি অপরম্নপ সৌন্দর্যে ও পাখীর কলরবে মুখরিত। উত্তরাংশে উঁচু ভূমি আর দÿÿনাংশে হাওড় এই উপজেলাকে দিয়েছে এক বৈচিত্রময় সৌন্দর্য। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান ছাড়াও হাজং, গারো, মনিপুরি, ত্রিপুরা সহ কয়েকটি উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকজন পাহাড়ের পাদদেশে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সাথে বসবাস করে। বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলার সংযোগস্থলে যাদুকাটা নদীর তীরে প্রতি বছর চৈত্র মাসে বসে বারম্ননী মেলা ও শাহ আরেফিন ফকিরের অসত্মানায় আসে অসংখ্য ভক্ত, লÿ হিন্দু-মুসলিমের পদধূলিতে মুখরিত হয়ে উঠে এ অঞ্চল।

        বাংলাদেশের ৩০টি কৃষি অঞ্চলের মধ্যে এই উপজেলা ২১ ও ২২ কৃষি পরিবেশ অঞ্চলের অমত্মর্ভূক্ত এবং মাটি অত্যমত্ম অমস্ন। ধান এ উপজেলার প্রধান ফসল হলেও চিনাবাদাম, শাকসবজি, আলু, গম, মিষ্টি আলু ইত্যাদি ফসলও আবাদ হয়ে থাকে। এছাড়া উদ্যান ফসল যেমন- লেবু, কমলালেবু, লিচু, আনারস সহ নানাবিধ প্রচলিত ফল এবং মসলা জাতীয় ফসল যেমন- আদা, হলুদ, গোল মরিচ, দারচচিনি, তেজপাতা সহ মহামূল্যবান আগর চাষের রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। এ অঞ্চলের প্রধান প্রধান সম্পদ হচ্ছে- ধান, সবজি, মাছ, পাথর আর বালু।

        কৃষি নির্ভর শিল্প কারখানা স্থাপনের অফুরমত্ম সম্ভাবনা থাকা সত্বেও যথোপযুক্ত উদ্যোগের অভাবে তা গড়ে উঠেনি। সামাজিক ও ব্যক্তি উদ্যোগে যথেষ্ট আত্ম কর্মসংস্থান মূলক কর্মকান্ড গ্রহন না করায় এখানকার অনেক লোককেই বেকার বা অলস সময় কাটাতে হয়।

        এখানকার উলেস্নখযোগ্য সংখ্যক ভূমির মালিক প্রবাসী জীবন যাপন বা অন্য পেশায় নিয়োজিত বলে বর্গা চাষীদের ওপর কৃষি কাজে নির্ভরশীলতা বেশি যা আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসানের অমত্মরায়। উপজেলার হাওড়-বাওর দÿÿনাংশে আর উত্তরাংশে উঁচু ভূমি বেশিরভাগ এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির সত্মর তুলনামূলকভাবে নিচে ও শক্ত পাথরযুক্ত, তাই সেচ ব্যবস্থা অপ্রতুল। বর্ষা মৌসুমে অথৈ পানি থাকলেও খরা মৌসুমে সেচের পানির অভাবে বিপুল পরিমান জমি অনাবাদী থাকে। সেচ কার্যক্রমের মাধ্যমে যা চাষের আওতায় আনা যেতে পারে।

ইউনিয়ন সমূহঃ

১। সলুকাবাদ     (আয়তন) ঃ ৬২.০০ বর্গ কিঃমিঃ

২। ধনপুর         (আয়তন) ঃ ৫৮.০০ বর্গ কিঃমিঃ

৩। পলাশ         (আয়তন) ঃ ৪৫.০০ বর্গ কিঃমিঃ

৪। বাদাঘাট (দঃ) (আয়তন) ঃ ৩৭.০০ বর্গ কিঃমিঃ

৫। ফতেপুর       (আয়তন) ঃ ৪৭.০০ বর্গ কিঃমিঃ

উপজেলার ঐতিহ্যঃ

সুনামগঞ্জ জেলার সবচেয়ে নিকটবর্তী উপজেলা বিশ্বম্ভরপুর। ২৪৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলার উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দÿÿনে সুনামগঞ্জ সদর ও জামালগঞ্জ, পূর্বে সুনামগঞ্জ জেলা সদর, পশ্চিমে তাহিরপুর উপজেলা। ২০১১খ্রিঃ আদম শুমারী অনুযায়ী লোকসংখ্যা ১,৫৬,৩৮১ জন (পুরচষ-৭৮,১৭৫জন ও মহিলা- ৭৮,২০৬ জন)। ইউনিয়ন ০৫টি, গ্রাম- ১০৮টি, মৌজা- ৬০টি, খানা- ২৯,৩৬৬টি, এক ফসলি জমি-১৫,৩৭২ হেক্টর, দুই ফসলি জমি- ১৬,৪০৪ হেক্টর, তিন ফসলি জমি- ৫,৬০৬ হেক্টর। উপজেলা পরিষদ/প্রশাসনের নিজস্ব ভূমি ১০ একর ৭৩ শতাংশ এবং থানার নিজস্ব ভূমি ৩ একর। উপজেলা প্রশাসনের নিজস্ব ভূমির সীমানা প্রাচীর নির্মানের পরিকল্পনা আছে।

প্রাচীন কালে এখানে জনবসতি ছিল খুবই কম। গভীর বন জঙ্গল, দুর্গম হাওর ও খালবিল বেষ্টিত উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো খাসিয়া পাহাড় মেঘালয় ও গভীর বন জঙ্গল থাকায় এখানে বাঘ, ভালস্নুক, হাতি, হরিণ, বানর সহ বন্য পশু পাখীতে ভরপুর ছিল। হাওর গুলো ছিল গভীর এবং নদীগুলো ছিল খরস্রোতা। ছিল প্রচুর মৎস সম্পদ এবং নল, খাগরা, হিজল করচ, কছম গাছ ঝড়া বন ইত্যাদি। পশু পাখি মৎস সহ জীব বৈচিত্র ছিল নৈসগ্রিক সুন্দর, পাহাড় থেকে নেমে আসা দামালিয়া, পুরাণ ঝাদুকাটা, ঘটঘটিয়া, রক্তি, ডলূরা চলতি নদী ইত্যাদি নদীগুলো খরস্রোতা ছিল। বৃহৎ খরচার হাওর, আঙ্গারলী সনার হাওর, দুমপুর, চাতল, কেঞ্চির গড়, বড়ডোয়ার ইত্যাদি হাওর জলাশয়ে প্রচুর ধান উৎপাদন হতো ও মৎস সম্পদ আহরন করা হতো। কালক্রমে নদী হাওর গুলো পাহাড় থেকে নেমে আসা বালুকারাশিতে ভরে যাচ্ছে। এর উলেস্নখযোগ্য কারন পাহাড়ের বন জঙ্গল উজার হয়ে যাওয়ায় ঢলের পানিতে অতি সহজেই বালি, মাটি এসে ভরাট হচ্ছে।

১৭৫৭খ্রিঃ বাংলার নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এই অঞ্চলে লোকজন আসতে শুরচ করে। এমনি অবস্থায় বর্তমান বিশ্বম্ভরপুর গ্রামে জনশূন্যহীন বিশ্বম্ভর নামে জনৈক ব্যাক্তি আশ্রয় নেয়। খড়েড় ঝুপরিতে বসবাস করতে থাকে এবং গাছতলায় সকাল সন্ধ্যা বিশ্বম্ভর দেবতার পূজা করে। বিশ্বম্ভর হচ্ছে সনাতন হিন্দু ধর্মের শ্রী শ্রী শিবের অপর নাম। আশ্রিত বিশ্বম্ভরকে অনুসরন করে এখানে আরো লোকজন বসবাস শুরচাকরে। আশ্রিত বিশ্বম্ভর ও বিশ্বম্ভর দেবতাকে কেন্দ্র করে বিশ্বম্ভরপুর গ্রাম নামে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে এ অঞ্চলে বৃহত্তর ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, কুমিলস্না সহ বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাপক হারে লোকজন এসে বন জঙ্গল পরিস্কার করে পতিত জায়গায় বসতী স্থাপন করতে শুরচ করে এবং বিভিন্ন কৃষি উৎপাদন ও চাষাবাদ করতে থাকে। এসময় আদি বসতী স্থানীয়রা বহিরাগতদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করে।

১৯৪৭খ্রিঃ পাক-ভারত ভাগাভাগী হওয়ার পর বৃহৎ পলাশ ইউনিয়ন (বর্তমান পলাশ, ধনপুর, সলুকাবাদ ইউনিয়ন) ছিল সুনামগঞ্জ থানার অমত্মর্গত। বাদাঘাট(দঃ) ইউনিয়ন ছিল তাহিরপুর থানার অমত্মর্গত এবং ফতেপুর ইউনিয়ন ছিল জামালগঞ্জ থানার অমত্মর্গত। এক পর্যায়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এ অঞ্চলে প্রশাসনিক ব্যবস্থার অভাবে আইন শৃংখলা রÿা ছিল খুবই দুর্বল। শিÿা, চিকিৎসা, বিশুদ্ধ পানিয় জলের ব্যবস্থা, যোগাযোগ উন্নয়ন সহ মৌলিক চাহিদা থেকে মানুষ বঞ্চিত ছিল। জনসাধারন কৃষি উৎপাদন, মৎস, পশু-পাখি শিকার করে এবং বন জঙ্গল থেকে কাঠ কেটে জীবিকা নির্বাহ করত। কালক্রমে মানুষের জীবন যাত্রার মান পরিবর্তন হতে থাকে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি শিÿাসহ সচেতনতা, আধুনিকতার কিছুটা uঁছায়া লাগতে শুরচকরে।

১৯৭৬খ্রিঃ আইন শৃংখলা রÿা ও জনস্বার্থে বর্তমান বিশ্বম্ভরপুর সরকারী আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অস্থায়ী কার্যালয় হিসাবে থানা স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে গণপুর্ত বিভাগের নির্মানে বর্তমান থানা ভবন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩খ্রিঃ ০৭ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট এরশাদ সরকার এর আমলে তৎকালীন সেনাবাহিনীর র্রিগেডিয়ার গোলাম রাববানী উপজেলার মান উন্নীত করনের শুভ উদ্ভোধন করেন। সে থেকে রাষ্ট্রীয় জাতীয় পর্যায়ে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর থেকে উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের কার্যক্রম চলে এবং পর্যায়ক্রমে উপজেলা কমপেস্নক্স, স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স, বিভিন্ন অফিস ও শিÿা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়। যোগাযোগ ÿÿত্রে বিভিন্ন রাসত্মা-ঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট নির্মিত হয়।

উচ্চ শিÿা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৯১খ্রিঃ সদরে দিগেন্দ্র বর্মন ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠিত এবং ২০১০খ্রিঃ পলাশ হাজেরা মুসলিম টেকনিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ধনপুর আছমত আলী কলেজ প্রতিষ্ঠা প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়াও মেরচয়াখলা মোমিনিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসাসহ ১টি মাদ্রাসা রয়েছে। উচ্চ বিদ্যালয় মোট ১০টি। প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৬টি। ধর্ম মন্ত্রনালয়ের অধীন উপজেলায় মসজিদ ভিত্তিক     টি ও মন্দির ভিত্তিক ১২টি শিÿা প্রতিষ্ঠান চালু আছে।

উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা বৃন্দের বিনোদনের জন্য ১৯৯৫খ্রিঃ অফিসার্স ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। উপজেলায় সাংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশের লÿÿ্য উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে ২০১১খ্রিঃ উপজেলা সদরে একটি শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৫খ্রিঃ থেকে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা উপজেলার বিভিন্ন সমস্যা ও শিÿা, স্বাস্থ্য, উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড সম্ভাবনাময় সহ বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখি করে আসছে। ১৯৯৮খ্রিঃ স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। খেলাধুলার উন্নয়নে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। শিÿার গুনগত মান বৃদ্ধির লÿÿ্য উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ২০১১খ্রিঃ উপজেলা শিÿা ফাউন্ডেশন ও দি লিটল বার্ড একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সদরে একটি জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। উপজেলা সদর মন্দির হিসেবে কৃষ্ণনগর পূজা মন্দিরকে চিহ্নিত করা হয়। উক্ত ০২টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের পাশাপাশি জাতীয় দিবস গুলোতে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠান করা হয়। উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে সদর স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হয়েছে।

অসহায় হতদরিদ্র স্থায়ী বসবাসের জন্য শ্রীধরপুর গুচ্ছ গ্রাম ও কাফনা গুচ্ছ গ্রাম রয়েছে। উপজেলা চিনাকান্দি বাজারে বিরাট পশুর হাট সহ বিশ্বম্ভরপুর সদর বাজার, ধনপুর, কাটাখালী, মাছিমপুর, স্বরচপগঞ্জ, মমিন বাজার, বাঘবের, মথুরকান্দি, ভাদেরটেক, পলাশ, জনতা বাজার, কারেন্টের বাজার, শক্তিয়ারখলা, বসমত্মপুর, মিয়ারচর, ফতেপুর, সাতগাঁও সমূহ হাটবাজার রয়েছে।

বর্তমান উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদগুলো জনকল্যানে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা, জবাব দিহিতা ও সু-শাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। সরকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা (এনজিও) জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড করে যাচ্ছে।

১৯৭১খ্রিঃ স্বাধীনতা যুদ্ধে এলাকার অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। এলাকাটি প্রায় পাকিস্থানি হানাদার মুক্ত থাকায় এখান দিয়ে লÿ লÿ শরনার্থী ভারতে আশ্রয় নেয়। উপজেলা সদর কৃষ্ণনগর গ্রামের প্রয়াত সুরেন্দ্র বর্মন এর বাড়ীতে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের বড় ক্যাম্প। বীর মুক্তিযোদ্ধা গৌরাঙ্গ বাবুর নেতৃত্বে এ ক্যাম্প থেকে এ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করা হত। এছাড়াও পলাশ উচ্চ বিদ্যালয়, মলিস্নকপুর, রাধানগর, বিশ্বম্ভরপুর, শক্তিয়ারখলা সহ বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প ছিল। বর্তমানে বিশ্বম্ভরপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যানে মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে।

বিশ্বম্ভরপুরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি উজ্জ্বল ঐতিহ্য রয়েছে। হিন্দু মুসলমানের পাশাপাশি আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে।

কৃষি নির্ভরশীল এ জনপদে প্রধান অর্থকরী ফসলের মধ্যে বোরো, আমন, আউশ ধান, শীম, আলু, রবি শস্য সহ প্রচুর শাকসবজি উৎপন্ন হয়। হাওর জলাশয়ে মৎস সম্পদ ও জীব বৈচিত্র সমৃদ্ধি দর্শনীয় নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর। তাছাড়া পাহাড়ের পাদদেশে সীমামত্মবর্তী এলাকাতেও দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এ সমসত্ম স্থানে পর্যটন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার উপযুক্ত।

হাওরের বিসত্মীর্ণ উর্বর জমিতে প্রচুর বোরো ধান উৎপন্ন হয়। ফসল রÿার জন্য পরিকল্পিত টেকসই বাঁধ, বেরীবাঁধ পরিপূর্ণভাবে নির্মিত না হওয়ার ফলে প্রায়ই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অকাল ফসল হানি ঘটে। বৃহত্তর ফসল রÿার জন্য বৃহৎ খরচার হাওরের গজারিয়া, ঘাগটিয়া ও আঙ্গারলী সনার হাওর এর মিছাখালি সহ উক্ত ০৩টি স্থানে রাবার ড্যাম নির্মিত হলে ফসল রাÿা এবং অধিক ফসল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি পরিকল্পিতভাবে টেকসই বাঁধ, বেরীবাঁধ নির্মানসহ পার্শ্ববর্তী নদীগুলো খনন করে নব্যতা ফিরিয়ে আনা জরচরী প্রয়োজন। এত ফসল রÿা, উৎপাদন বৃদ্ধি, নৌ-পথে যোগাযোগ বৃদ্ধি প্রাকৃতিক বিপর্যয় রোধ পরিবেশ রÿা হবে। প্রাকৃতিক সম্পদ বালি পাথর, মাছ এগুলো পরিকল্পনা ভাবে সংরÿন ও সুষ্ঠ সঠিক আহরনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি রাসত্মার পাশে ও পতিত জায়গায় ফলজ বৃÿ রোপন সহ বনায়ন করা যেতে পারে।

ভাষা ও সংস্কৃতিঃ

বাংলা ভাষা।

উপজাতীয় আদিবাসীঃ  হাজং, মনিপুরি ও গারো সম্প্রদায়- মোট ৬৭৮ জন।